আলোর মনি রিপোর্ট: লালমনিরহাটে গৃহপরিচারিকা সেই শিশুর ওপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় গত ৩দিনেও মামলা করতে পারেনি ভুক্তভোগী পরিবার। আইনি জটিলতার কথা বলে আদিতমারী থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। সারা শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন নিয়ে গত রোববার (২৯ আগস্ট) থেকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে মেয়েটি। হাসপাতালের তৃতীয় তলায় সার্জারী ওয়ার্ডের বিছানায় শরীরে ব্যথা ও জ্বালা-যন্ত্রণা নিয়ে এখনও কাতরাচ্ছে শিশুটি। এদিকে শিশুটিকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। তারা শিশুটির পরিবারকে আইনি সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
শিশু হাসিনা বেগমের নানি আমেনা বেগম ও মা রহিমা বেগম জানান, গত ২দিন আদিতমারী থানায় গেলেও পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি। সোমবার (৩০ আগস্ট) আদিতমারী থানা পুলিশ তাদের জানিয়েছিল মামলায় ভুল আছে, ঠিক করে নিয়ে আসতে হবে। পরে মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) আদিতমারী থানায় গেলে পুলিশ ঘটনাস্থল ঢাকায় গিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেয়।
তারা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, তাদের ভাত খাওয়ার টাকা নেই, ঢাকায় যাবেন কীভাবে। তারা দাবি করেন, গরিব দেখে থানা তাদের মামলা নেয়নি।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুর ইসলাম বলেন, আইনি জটিলতার কারণে এখানে মামলা নেওয়া সম্ভব নয়। ভুক্তভোগী পরিবারকে ঘটনাস্থল ঢাকায় মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নরসিংদী জেলার পুলিশ পরিদর্শক আজহার আলী সুমন ও তার স্ত্রী ডেইজির বিরুদ্ধে তাদের ঢাকার বাসায় শিশু গৃহপরিচারিকা হাসিনা বেগমের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) বিভিন্ন অনলাইন ও পত্র-পত্রিকায় একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সাহায্যের হাত বাড়ায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) সহসমন্বয়কারী (তদন্ত) অনির্বাণ সাহা জানান, প্রতিবেদনটি পড়ে শিশুটির নানির সঙ্গে মোবাইল ফোনে তার কথা হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী পরিবার মামলা করতে চাইলে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) সব ধরনের সহযোগিতা করবে। মেয়েটির চিকিৎসার বিষয়েও তিনি সাহায্যের আশ্বাস দেন।
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতলী গ্রামের দিনমজুর হাসান আলী ও রহিমা দম্পতির ২মেয়ের মধ্যে বড় হাসিনা বেগম। বছর খানেক আগে একই গ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা আজহার আলী সুমন বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে হাসিনাকে গৃহপরিচারিকা হিসেবে ঢাকায় তার বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর থেকেই হাসিনার ওপর নির্যাতন চালাতেন সুমন ও তার স্ত্রী।